তওবার পর ঘুষের টাকার ব্যাপারে করণীয় কী?
.
প্রশ্নঃ
.
আমার এক ভাই চাকরি করতেন। তখন তিনি পারিবারিক কারণে তার এক সহকর্মীর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন। যার কিছু টাকা তিনি ফেরতও দেন। বাকি টাকা ফেরত দেননি। পরবর্তীতে উক্ত সহকর্মী থেকে ঘুষ হিসেবে কিছু টাকা গ্রহণ করেন। উক্ত সহকর্মী পূর্বে যে টাকা ধার হিসেবে দিয়েছিলেন, সেটাও আর ফেরত নেননি; বরং তাকে ঘুষ হিসেবে দিয়েছে বলে ধরে নেন। এখন আমার ওই ভাই এসব থেকে দায়মুক্ত হতে চাচ্ছেন। যাদের কাজের বিনিময়ে ঘুষ নিয়েছেন, তা তার অজানা এবং খুঁজে পাওয়ারও কোনও উপায় নেই। এখন জানার বিষয়;
.
(ক) উক্ত সহকর্মী থেকে যে টাকা ধার হিসেবে নিয়েছিলেন, সেটা তাকে ফেরত দিলে উক্ত অর্থের দায় থেকে মুক্ত হওয়া যাবে কিনা?
.
(খ) ঘুষের সব টাকা উক্ত সহকর্মীকে ফেরত দিয়ে দিলে দায় মুক্ত হওয়া যাবে কিনা? এটা নিশ্চিত যে, উক্ত ব্যক্তি এটা যাদের থেকে নিয়েছিল, তাদের ফেরত দিবে না এবং তাদের খুঁজেও পাবে না।
.
-উসমান
.
উত্তরঃ
.
জি, তিনি সহকর্মী থেকে যে টাকা ধার নিয়েছিলেন, সে টাকা যদি তিনি না পেয়ে থাকেন, তাহলে তার পাওনা তাকেই ফেরত দিতে হবে।-জামে তিরমিযী: ২/৫৫৬ হাদীস নং: ১২৬৫ দারুল গরবিল ইসলামী
.
অবশ্য প্রশ্ন থেকে বুঝা যাচ্ছে, সহকর্মী তার অবশিষ্ট পাওনা টাকা মূলত অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে আপনাকে ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন এবং তার পাওনা তিনি যার পক্ষ থেকে ঘুষ দিয়েছেন, তার কাছ থেকে আদায় করে নিয়েছেন। যদি বিষয়টি এমনই হয়, তার অর্থ দাঁড়ায়, সহকর্মীর পাওনা তিনি বুঝে পেয়েছেন। সুতরাং ঘুষের পুরো টাকাটাই মূলত যাদের কাজের জন্য ঘুষ দেওয়া হয়েছিলো তাদের।
.
যদি এই বিশ্লেষণ সঠিক হয়, অপরদিকে ঘুষদাতাকে খুঁজে পাওয়াও সম্ভব না হয় এবং সহকর্মীকে ঘুষের টাকা ফেরত দিলে তিনিও তা প্রকৃত মালিককে দিবেন না বা দিতে পারবেন না, তাহলে তা থেকে দায় মুক্তির উপায় হল, মালিকের পক্ষ থেকে তা কোনো গরীবকে কিংবা জনকল্যাণমূলক কাজে দান করে দেওয়া।
.
অবশ্য শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ এর মতে এ অর্থ থেকে দায়মুক্তির উত্তম পথ হচ্ছে জি-হা-দে-র কাজে দান করে দেওয়া। তিনি বলেন,
.
ومن أراد التخلص من الحرام والتوبة ولا يمكن رده إلى أصحابه فلينفقه في سبيل الله عن أصحابه فإن ذلك طريق حسنة إلى خلاصه مع ما يحصل له من أجر الجهاد. -مجموع الفتاوى 28/421-422، الناشر: مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف، المدينة النبوية، المملكة العربية السعودية
.
“যে ব্যক্তি হারাম থেকে দায়মুক্ত হতে চায় এবং তওবা করতে চায়; অথচ তা মালিকের নিকট পৌঁছানো সম্ভবপর নয়, তাহলে সে যেন তা মালিকের পক্ষ থেকে জি-হা-দে-র পথে খরচ করে। এটা দায়মুক্তির উত্তম পথ এবং এতে সে জি-হা-দে অংশ গ্রহণেরও সাওয়াব পাবে।” -মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৪২১-৪২২
.
মুফতি আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
.
২৫-১১-২৪ ঈ