প্রশ্নঃ

একবার আমাদের এক ভাই অসুস্থ হন। তখন তার মা মান্নত করেন, সে সুস্থ হলে একটি ছাগল সাদাকা করবেন। পরে ওই ভাই সুস্থ হন। এখন তিনি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানতে চাচ্ছেন,

১. মান্নতকারী যদি পশু সাদাকা করার মান্নত করেন, তবে কি মান্নতকারীকে পশুই সাদাকা বা কুরবানী করতে হবে? নাকি পশুর মূল্য সমপরিমাণ টাকা সাদাকা করে দিলেও হবে?

২. যদি সমপরিমাণ মূল্য সাদাকা করা যায়, তবে মান্নতকারীর সম্মতিক্রমে কেউ যদি এমন কোনো জামাআত, যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে আছেন, তাদেরকে সাদাকা করেন, তবে মান্নত আদায় হবে কি?

৩. দ্বীন প্রতিষ্ঠার যে কোনো খাতেই কি এই অর্থ ব্যয় করা যাবে? না, মান্নতের জন্য নির্দিষ্ট খাত আছে? নির্দিষ্ট খাত থাকলে; তা কী কী?

৪. উক্ত মাল কি ভবিষ্যৎ জিহাদের প্রস্তুতির নিয়তে অস্ত্র ক্রয় করার কাজে ব্যয় করা যাবে?

৫. উক্ত ভাইটি এখনও নিজ পিতা-মাতার অধীনে আছেন। অর্থাৎ, তিনি উপার্জন করেন না। উক্ত ভাইটির বেশ কিছু টাকা ঋণ রয়েছে। এখন তার মা তার সুস্থতার জন্য যে ছাগল সাদাকা করার মান্নত করেছিলেন, তার মূল্য কি তিনি তার ছেলেকে অর্থাৎ উক্ত ভাইটিকে দিতে পারবেন, যেন তিনি তার ঋণ পরিশোধ করতে পারেন?

প্রশ্নকারী- মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ

উত্তরঃ
মান্নত এর পশু বা সমপরিমাণ অর্থ সাদাকা করা প্রসঙ্গে

১. ছাগল বা গরু যে পশু সাদাকা করার মান্নত করেছেন, সে প্রকার কুরবানীর উপযোগী একটি পশু বা তার মূল্য পরিমাণ অর্থ সাদাকা করলেও মান্নত আদায় হয়ে যাবে। -আলবাহরুর রায়িক: ২/৩৮৭

২-৪. মান্নতের খাত সুনির্দিষ্ট। মান্নত আদায় হওয়ার জন্য যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো গরীবকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। সরাসরি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান বা জিহাদি জামাআত যাকাতের খাত নয়। জিহাদের প্রস্তুতি ও অস্ত্রশস্ত্র ক্রয়েও যাকাতের অর্থ খরচ করা যাবে না। তবে এসব প্রতিষ্ঠান ও জামাআতে সাধারণত মান্নতের খাত থাকে। আপনি দেয়ার সময় বলে দেবেন যে, এটি মান্নতের অর্থ, তাহলে তারা তা মান্নতের খাতে ব্যয় করবেন ইনশাআল্লাহ।

৫. মান্নতের অর্থ মান্নতকারীর উসূল-ফুরূ’ তথা পিতা-মাতা, দাদা-দাদি, নানা-নানি এবং এই সূত্রের উর্ধ্বতন কাউকে, একইভাবে ছেলে-মেয়ে বা নাতি-নাতনি এবং এই সূত্রের নিম্নতন কাউকে দেয়া যায় না। এমনিভাবে স্বামী-স্ত্রীও একে অপরকে এ ধরনের অর্থ দিতে পারে না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মা তার মান্নতকৃত ছাগলের অর্থ ছেলেকে দিতে পারবেন না। তবে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে এই তিন প্রকার বাদ দিয়ে অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনকে দিতে পারবেন। -তাবয়িনুল হাকায়িক: ২/১২০-১২২, আলবাহরুর রায়িক: ২/৫২০-৫২১

আরও দেখুন:

 

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১১-১১-২০২৪ ঈ.

#উচ্চতর #ইসলামী #আইন #গবেষণা #বিভাগ #ফাতওয়া