প্রশ্নঃ
জুমআর দিন সূরা কাহফ কখন পড়তে হয়? জুমআর নামাযের আগেই পড়া জরুরি? না নামাযের পরে সূর্যাস্তের পূর্বে পড়লেও হবে?
প্রশ্নকারী- তারিক মুসান্না
উত্তরঃ
জুমআর দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াতের ফযীলত সম্পর্কে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে ইবনে হাজার (রহ)-এর দৃষ্টিতে সবচেয়ে শক্তিশালী বর্ণনা হচ্ছে, আবু সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর হাদীসটি, যেমনটা তিনি নাতায়িজুল আফকারে (৫/৩৭) বলেছেন-
হাদীসটি ইমাম বায়হাকী (রহ) বর্ণনা করেন,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ: ” مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْبَيْتِ الْعَتِيقِ” -شعب الإيمان: 2220، قال البيهقي: وهَذَا هُوَ الْمَحْفُوظُ مَوْقُوفٌ. اهـ
“আবু সাঈদ খুদরী (রাযি) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য তার অবস্থানস্থল হতে বাইতুল্লাহ পর্যন্ত নূরের আলোয় আলোকিত হয়ে যাবে।” -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী: ২২২০
বায়হাকীর অন্য বর্ণনায় এসেছে,
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ. -السنن الكبرى للبيهقي : 5996، قال الحافظ ابن حجر في نتائج الأفكار (5/ 39): وهذا حديث حسن … واختلف على هشيم في رفعه ووقفه، والذين وقفوه عنه أكثر وأحفظ، لكن له مع ذلك حكم المرفوع، إذ لا مجال للرأي فيه. اهـ
“যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য এক জুমআ হতে অন্য জুমআ পর্যন্ত নূরের আলোয় আলোকিত হয়ে যাবে।” -সুনানে কুবরা, বায়হাকী: ৫৯৯৬
উপরের বর্ণনাগুলোতে জুমআর দিনে সূরা কাহফ তিলাওয়াতের কথা বলা হলেও কোনো বর্ণনায় জুমআর রাতের কথাও এসেছে।
ইমাম দারিমী (রহ) বর্ণনা করেন,
عن أبي سعيد الخدري، قال: «من قرأ سورة الكهف ليلة الجمعة، أضاء له من النور فيما بينه وبين البيت العتيق» – سنن الدارمي 3450، قال المحقق حسين سليم أسد الداراني: إسناده صحيح إلى أبي سعيد. اهـ
“আবু সাঈদ খুদরী (রাযি) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জুমআর রাতে সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য তার অবস্থানস্থল হতে বাইতুল্লাহ পর্যন্ত নূরের আলোয় আলোকিত হয়ে যাবে।” -সুনানে দারিমি: ৩৪৫০
হাফেজ ইবনে হাজার (রহ) উভয়টির মাঝে সমন্বয় করে বলেছেন, যে হাদীসে রাতের কথা বলা হয়েছে, সেখানেও রাত-দিন উভয়টিই উদ্দেশ্য এবং যে হাদীসে দিনের কথা এসেছে, সেখানেও দিন-রাত উভয়টি উদ্দেশ্য। -দেখুন, নাতায়িজুল আফকার: ৫/৪১, ফয়জুল কাদির: ৬/১৯৯
উল্লেখ্য, শরীয়তের দৃষ্টিতে রাত আগে আসে। সে হিসেবে শুক্রবার শুরু হয়, বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে। সুতরাং বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় সূরা কাহফ তিলাওয়াত করলেই উক্ত ফযীলত পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। অবশ্য একেবারে শেষ ওয়াক্ত বা জুমআর পরে পড়ার অপেক্ষায় না থেকে তিলাওয়াতের মতো নেক কাজ আগে আগে করে নেয়া যে ভালো, তা তো বলাই বাহুল্য। -রদ্দুল মুহতার: ২/১৬৪
فقط، والله تعالى أعلم بالصواب
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২৪-০৩-১৪৪৬ হি.
২৭-১০-২০২৪ ঈ.
#উচ্চতর #ইসলামী #আইন #গবেষণা #বিভাগ #ফাতওয়া