ছেঁড়া-ফাটা টাকার বিনিময়ে নতুন টাকার লেনদেন
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
আমরা অনেকেই বিভিন্ন সময় বাধ্য হয়ে পুরাতন ছেঁড়াফাটা টাকার বিনিময়ে নতুন টাকা কমবেশী করে লেনদেন করে থাকি। কিন্তু শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে এর বৈধতা আছে কি না বা থাকলেও বৈধতার পদ্ধতি কি তা জানার চেষ্টাও করি না। আজকের পর্বে এই ধরনের লেনদেনের ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরামের দৃষ্টিভঙ্গি তোলে ধরার চেষ্টা করবো। ইনশাআল্লাহ।

শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে একই দেশের এবং একই জাতীয় মুদ্রার পরস্পর লেনদেনের ক্ষেত্রে বিনিময় সমান সমান ও হাতে হাতে হওয়া আবশ্যক। যদিও তা নতুন এবং পুরাতন ছেঁড়া নোটের পরস্পরের লেনদেনই হোক না কেনো। এক্ষেত্রে কমবেশি করা নাজায়েয এবং সুদের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং দেশীয় ছেঁড়া বা পুরাতন টাকা দিয়ে নতুন টাকা কমবেশি করে আদানপ্রদান করা নাজায়েয।

তাই নতুন নোটের বিনিময়ে পুরাতন নোট কমবেশির সাথে ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ ও সুদের অন্তুর্ভুক্ত।

কারণ বর্তমানে কাগজি নোটগুলোই আদানপ্রদানের মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণ-রূপার মুদ্রার স্থান দখল করে নিয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ছেঁড়া-ফাটা নোট যদি চালানো সম্ভব না হয় তাহলে ব্যাংকের মাধ্যমে পরিবর্তন করে নিবে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতো বিনামূল্যেই উক্ত সেবাটি প্রদান করে। তাই এক্ষেত্রে সুদী লেনদেন করার কোন যৌক্তিকতা নেই।


জামিয়া ইসলামিয়া বিন্নুরি টাউন,করাচী, ফাতাওয়া ওয়েবসাইটে ছেঁড়া বা পুরাতন টাকা দিয়ে নতুন টাকা কমবেশি করে বিক্রি করা বৈধ হওয়ার একটি পদ্ধিতি এভাবে বলা হয়েছে যে,

“ যদি এই ধরনের চুক্তি করার প্রয়োজন হয়, তাহলে
বৈধতার পদ্ধিতি এরকম হতে পারে যে, নতুন নোট প্রদানকারী ব্যক্তি নতুন নোটের সাথে উদাহরণস্বরূপ, এক হাজার মূল্যের নোটের সাথে কোনো অতিরিক্ত জিনিষ যোগ করে একই চুক্তিতে বিক্রি করবে। যেমন একটি কলম সাথে রেখে দেবে। অতঃপর নতুন এক হাজার টাকার বিনিময়ে ছেঁড়া-ফাটা এক হাজার টাকা হয়ে যাবে। আর ছেঁড়া-ফাটা টাকা প্রদানকারী কর্তৃক দেওয়া অতিরিক্ত টাকা সেই কলমের বিনিময়ে হয়ে যাবে। " এভাবে কেউ লেনদের করলে তা বৈধ হবে।


-তথ্যসূত্র: বুখারী শরীফ: ২/৭৫০, মুসলিম শরীফ: ৫/৪২, হিদায়া: ৩/১০৪ ও ৬১৮, আহসানুল ফাতাওয়া: ৭/২২, ২৩ ও ৫৪, বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরা ১/১৬৪-১৬৬; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/২২; আততাযাখখুমুন নকদী ফিলফিকহিল ইসলামী ৭৩; মাজাল্লাহ মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী ৩/১৯৬৫
জামিয়া ইসলামিয়া বিন্নুরি টাউন,করাচী, ফাতাওয়া
নম্বর ১৪৪২০৯২০২২৩৪


جاء في رد المحتار 5/257، ایچ ایم سعید

"(هو) لغة الزيادة. وشرعا (بيع الثمن بالثمن) أي ما خلق للثمنية ومنه المصوغ (جنسا بجنس أو بغير جنس) كذهب بفضة (ويشترط) عدم التأجيل والخيار و (التماثل) أي التساوي وزنا (والتقابض) بالبراجم لا بالتخلية (قبل الافتراق) وهو شرط بقائه صحيحا على الصحيح (إن اتحد جنسا وإن) وصلية (اختلفا جودة وصياغة) لما مر في الربا .

(قوله: وإن اختلفا جودة وصياغة) قيد إسقاط الصفقة بالأثمان؛ لأنه لو باع إناء نحاس بمثله وأحدهما أثقل من الآخر جاز مع أن النحاس وغيره مما يوزن من الأموال الربوية أيضا؛ لأن صفة الوزن في النقدين منصوص عليها فلا تتغير بالصنعة ولا يخرج عن كونه موزونا بتعارف جعله عدديا لو تعورف ذلك بخلاف غيرهما، فإن الوزن فيه بالعرف فيخرج عن كونه موزونا بتعارف عدديته إذا صيغ وصنع كذا في الفتح، حتى لو تعارفوا بيع هذه الأواني بالوزن لا بالعدد لا يجوز بيعها بجنسها إلا متساويا، كذا في الذخيرة نهر.

১৫/১১/২৪ঈ